মানুষ স্বার্থপর
আমরা মানুষ খুবই স্বার্থপর। বেশিরভাগই সবসময় নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা করি। কোনো কিছু করতে গেলে আগে নিজের লাভ-লসের হিসাবটা কষে নেই। তবে অনেক পরিস্থিতিতে এই আমরাই আবার আমাদের নিজেদের কথা বেমালুম ভুলে যাই, নিজের ভালো থাকার তোয়াক্কা করি না। নিজেকে নিজেই অবহেলা করি, কষ্ট দেই। আমাদের এই কষ্টের কারণ সবসময়ই অন্য কেউ হয়ে থাকে।মানুষ কি পৃথিবীতে এসেছে একজন আরেকজনকে কষ্ট দেওয়ার জন্য? সৃষ্টির সেরা জীবের পৃথিবীতে আসার উদ্দেশ্য কি? আমাদের কি একটু ভেবে দেখা উচিত নয়? নাকি সময় এখনো আসে নি? না এসে থাকলে কবে আসবে?
মানুষ খুবই অকৃতজ্ঞ, বোকা। আমরা সৃষ্টিকর্তাকে ভুলে পৃথিবী নিয়ে পড়ে আছি। চরম বিপদে মানুষ সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে। আবার যখন বিপদ কেটে যায় তারা সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহের কথা ভুলে যায়।
মানুষ এখন বেশি হতাশায় নিমজ্জিত। জীবন নিয়ে এদের হাজারো অভিযোগ। মানুষ স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে। স্বপ্ন পূরণ না হলে এরা কষ্ট পায়, হতাশায় ভোগে। অথচ স্বপ্ন পূরণের জন্য যা যা করা উচিত তার কিছুই তারা করে না। তারপর তারা ভাগ্যকে দোষারোপ করতে থাকে। অথচ মূল দোষী সে নিজেই।
কেউ যখন বলে ‘আমার ভাগ্য খারাপ’ তারা কি কখনো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে থাকা অর্ধ-উলঙ্গ পাগল মেয়েটাকে দেখেছে? যে হাসিমুখে বহন করছে আরেকটি জীবন যা সম্পর্কে সে সম্পূর্ণই অজ্ঞাত! তবুও আমরা সৃষ্টিকর্তার প্রশংসা করি না। আমরা শুধু আমাদের জীবন নিয়েই পড়ে আছি। আমরা ভাবি আমাদের ভাগ্যই হয়তো সবচেয়ে বেশি খারাপ বা আমরাই সবচেয়ে বেশি দুঃখে-কষ্টে আছি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে পৃথিবীতে এমন অসংখ্য মানুষ আছে যাদের ভাগ্য আমার আপনার চেয়েও খারাপ, তাদের দুঃখ কষ্ট আমার আপনার চেয়েও হাজার গুনে বেশি। তাদের চেয়ে আপনি সুখি নন কি যারা রাস্তায় ঘুমায়, মানুষের থেকে খাবার ভিক্ষা করে খায়? তাহলে কিভাবে বলতে পারেন আপনার ভাগ্য খারাপ যখন আপনার মাথার উপরে একটা ছাদ আছে, তিনবেলা আরাম করে খেতে পাচ্ছেন?
আমরা শুধু বলি, ‘এটা পেলাম না’ এবং মন খারাপ করি। অথচ সৃষ্টিকর্তা আগে থেকেই যা কিছু দিয়েছেন সেগুলো সম্পর্কে আমরা কোনো কথা বলি না, সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া আদায় করি না। আমরা এতটাই অকৃতজ্ঞ?
আমরা দিন দিন অলস হয়ে যাচ্ছি। সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে আমাদের চিন্তা-ভাবনার শক্তি কমে যাচ্ছে। আমরা এখন চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই কথা বলি, সিদ্ধান্ত নেই। এগুলোর দ্বারা আমরাই আবার ক্ষতিগ্রস্ত হই। আমাদের উচিত নিজেদেরকে নিয়ে ভাবা, নিজেকে ভালোবাসা। যে নিজেকে ভালোবাসতে জানে না, নিজের যত্ন নিতে জানে না সে কিভাবে আরেকজন মানুষকে ভালোবাসতে পারে?
লক্ষ্য একজন মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। যাদের জীবনে কোনো লক্ষ্য নেই তাদের বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষা তেমন তীব্র নয়। একজন মানুষ যে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য সামনে নিয়ে বাঁচে তার জীবনে যত দুঃখ কষ্টই আসুক সে হতাশ হয় না, সে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকে। কারণ সে জানে তাকে তার লক্ষ্যে পৌঁছাতেই হবে। লক্ষ্যে পোঁছানোর এই আকাঙ্ক্ষা তাকে বাঁচিয়ে রাখে, জীবন সংগ্রামে তাকে শক্তি জোগায়। অন্যদিকে যার জীবনে কোনো লক্ষ্য নেই তারা অল্পতেই হাল ছেড়ে দেয়।
আমাদের চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন আনতে হবে! আমাদের উচিত পজিটিভ চিন্তা করা। বেশি নেগেটিভ চিন্তা-ভাবনা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বেশি বেশি বই পড়তে হবে। শিক্ষামূলক কন্টেন্ট দেখতে হবে। মনে রাখবে, জ্ঞানই শক্তি।
- তুষার আহমেদ
Rate This Article
Thanks for reading, মানুষ স্বার্থপর (Man Is Selfish)! Stay blessed.