আমাদের সমাজে মানুষের মধ্যে ভাগ্য নিয়ে এরকম আরো ভুল ধারণা আছে। কিছু মানুষ মনে করে তারা পৃথিবীতে যা কিছু করে সেটা তাদের ভাগ্যে লেখা ছিলো। তাই সে যদি কোনো পাপ করে তাহলে সেটা তার ভাগ্যে ছিলো বলে করেছে। যেহেতু ভাগ্য আল্লাহ লিখেছেন তাই ঐ পাপ কাজের দায় তার নয় বরং আল্লাহ'র।
কিন্তু বিষয়টি মোটেও এরকম নয়। আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন উত্তমরূপে এবং আমাদের দিয়েছেন নিজস্ব ইচ্ছা। অর্থাৎ আমরা নিজেরা আমাদের ইচ্ছে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারি। কিন্তু আল্লাহর সৃষ্টি ফেরেস্তা'গণ যাদের নিজস্ব ইচ্ছা নেই। অর্থাৎ আল্লাহ যা নির্দেশ করেন তারা সেটাই পালন করেন। তারা নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত বা নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী কিছু করতে পারে না। মহান আল্লাহ মানুষ এবং জ্বীন'জাতিকে নিজস্ব ইচ্ছা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তাই যখন আমরা কোনো পাপ কাজ করি তখন সেটা কোনোভাবেই আল্লাহর ইচ্ছে নয়, বরং সেটা আমাদের নিজেদের ইচ্ছা। তাই আমাদের পাপ কাজের দায়ভার সম্পূর্ণ আমাদের।
কিন্তু আমার ভাগ্য যদি আগে থেকেই লেখা থাকে তাহলে আর আমার নিজস্ব ইচ্ছা থাকে কই? সেটা কি আল্লাহ'র ইচ্ছে হয়ে যায় না? কারণ তিনি তো আমার ভাগ্য লিখে রেখেছেন।
উত্তর হচ্ছে, আল্লাহ আমাদের ভাগ্যে লিখে রেখেছেন বলে যে আমরা কাজটা করি বা ভবিষ্যতে করবো বিষয়টা মোটেও এমন না। মহান আল্লাহ হচ্ছেন সবচেয়ে ক্ষমতাবান, আল্লাহ'র আছে ইলমে গায়েব। তিনি ভবিষ্যত সম্পর্কে সবকিছু জানেন। তাই আপনি যখন কোনো পাপ কাজ করেন এমন না যে আল্লাহ আগে থেকে লিখে রেখেছে বলে আপনি করেছেন বরং আল্লাহ আগে থেকেই আপনার ভবিষ্যত জানেন। আল্লাহ জানেন যে আপনি এত বছর বয়সে এসে এই পাপ কাজটি করবেন তাই তিনি আগে থেকেই সেটা লিখে রেখেছেন।
মনে করুন আপনি আপনার আব্বুর পকেট থেকে কাউকে না বলে ৫০ টাকা নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নিলেন। এখন এমন না যে এটা আল্লাহ আপনার ভাগ্যে লিখে রেখেছেন দেখে আপনি করেছেন। বিষয়টি হচ্ছে এমন যে, আল্লাহ আগে থেকেই জানতেন ১০ বছর বয়সে আপনি আপনার বাবার পকেট থেকে ৫০ টাকা চুরি করবেন। আল্লাহ জানেন দেখেই সেটা আপনার ভাগ্যে আগে থেকে লিখে রেখেছেন। কারণ তিনি হচ্ছেন সর্বজ্ঞানী।
তাই আপনি যদি কোনো পাপ করেন সেটা আপনার ভাগ্যে ছিলো না, সেটা আপনি নিজ ইচ্ছায় করেছেন। আল্লাহ আপনাকে নিজের ইচ্ছে মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন। আল্লাহ পাপকাজ থেকে আমাদের বিরত থাকতে বলেছেন। তাই আপনি যখন আল্লাহ নিষেধ করার পরও নিজের ইচ্ছায় পাপকাজে লিপ্ত হচ্ছেন সেটা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। অবশ্যই পাপকর্মের জন্য আপনাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।
যেহেতু আমাদের নিজস্ব ইচ্ছা আছে তাই আমরা ভালো বা খারাপ এর মধ্যে একটা বেছে নিতে পারি। যদি আমরা ভালো বেছে নেই তাহলে আল্লাহ আমাদের জন্য রেখেছেন পুরষ্কার। আল্লাহ কুরআনের মধ্যে সমস্ত ভালো-খারাপ বর্ণনা করেছেন। এখন আপনার সিদ্ধান্ত আপনি কোনটা বেছে নিবেন।
- Tushar Ahmed
Rate This Article
Thanks for reading, ভাগ্য কি? (What is fate?)! Stay blessed.